spot_imgspot_img
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নিবন্ধিত। রেজি নং-৯২
শনিবার, ৩ জুন ২০২৩
প্রচ্ছদঅর্থনীতিঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা স্থগিত করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা স্থগিত করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

spot_img

বাংলাধারা প্রতিবেদক »

খেলাপিদের দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ৯ শতাংশ সুদহারে ঋণ পুনঃতফসিলের বিশেষ সুবিধা আরও দুই মাস স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিষয়টির ওপর হাইকোর্ট দ্বিতীয় দফা স্থিতাবস্থা দেয়ায় এ নির্দেশনা দিয়েছে ব্যাংক নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাটি।

মঙ্গলবার ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালার ওপর স্থিতাবস্থা দুই মাস বাড়িয়ে নতুন সার্কুলার জারি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত ১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা জারি করা হয়। এতে মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সরল সুদে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ টানা ১০ বছরে ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেয়া হয়, যা নিয়ে বিভিন্ন মহল নিন্দা ও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়।

এর পর গত মঙ্গলবার (১৮ জুন) ওই সার্কুলারের স্থগিতাদেশ চেয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আদালতে একটি রিট করা হয়। রিটের শুনানি করে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই সার্কুলারের ওপর ১ মাসের স্থিতাবস্থা দেন। গতকাল সোমবার পুনরায় এ বিষয়ে শুনানিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ সুবিধার ওপর আরও দুই মাস স্থিতাবস্থা দেন হাইকোর্ট। আদালতের এই স্থিতাবস্থার এক দিনের মাথায় আজ এ নির্দেশনা দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

জানা গেছে, অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ঋণ খেলাপিদের সুবিধা দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে গত ১৬ মে “ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা” শীর্ষক সার্কুলার জারি করে।

এতে বলা হয়, বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে ব্যবসায়ী/শিল্পোদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্যাংকের ঋণ অনেক ক্ষেত্রেই নিয়মিতভাবে পরিশোধিত হচ্ছে না এবং সংশ্লিষ্ট ঋণ বিরূপভাবে শ্রেণিকৃত হয়ে পড়ায় ঋণ বিতরণ ও আদায় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে ব্যাংকিং খাতের বিরূপভাবে শ্রেণিকৃত ঋণ নিয়মিত আদায়ের লক্ষ্যে কতিপয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর ভিত্তিক ঋণ খেলাপিরা সুযোগ পাবেন। ছাড় গ্রহণের জন্য আগামী ৯০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ১৬ আগস্টের মধ্যে আবেদন করবেন।

২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে আগামী ১০ বছর পর্যন্ত ঋণ পরিশোধের সুযোগ পাবেন। তবে প্রথম এক বছর কোনো টাকা পরিশোধ করতে হবে না। আর পুনঃতফসিলকৃত ঋণের সুদহার হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ বা ব্যাংকের কস্ট ফান্ডের সঙ্গে ৩ শতাংশ যোগ করে। খেলাপি ঋণের সুদ ব্যাংক আয় দেখাতে পারে না। তাই পৃথক হিসেবে রাখতে হয়। পৃথক হিসেবে রাখা সব সুদ মাফ করে দেয়া হবে। এই সুবিধা গ্রহণকারীরা ব্যাংক থেকে আবার নতুন করে ঋণ নিতে পারবেন। প্রচলিত নিয়ম মেনে সতর্কতার সঙ্গে ঋণ দিতে বলা হয়েছে। নতুন ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলে পুনঃতফসিল সুবিধা বাতিল হবে। সুবিধা গ্রহণের পর নিয়মিত অর্থ পরিশোধ না করলেও তাদের খেলাপি করা যাবে না। এখানে ছাড় দেয়া হয়েছে।

৯টি মাসিক কিস্তির ৩টি এবং ত্রৈমাসিক ৩ কিস্তির ১টি পরিশোধ না করলেও নিয়মিত থাকা যাবে। তবে মাসিক কিস্তির মধ্যে ৬টি ও ত্রৈমাসিক কিস্তির ২টি পরিশোধ না করলে পুনঃতফসিল সুবিধা বাতিল করা হবে। স্বাধীনতার পর থেকে যারা ঋণ খেলাপি, তাদের এককালীন এক্সিট সুবিধা দেয়া হবে। এক্ষেত্রে তাদের খেলাপি ঋণের হিসাব হবে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরের এককালীন হিসাবায়ন ভিত্তিতে।

অর্থাৎ ১৯৭১ সালের পর থেকে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যত খেলাপি ঋণ আছে, তার হিসাব করা হবে। কোনো ঋণখেলাপি যদি মনে করে, এককালীন ঋণ পরিশোধ করে খেলাপির তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবেন, তাহলে সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে সার্কুলারে। এতে বলা হয়েছে, ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ঋণখেলাপিরা ঋণ পরিশোধের জন্য এক বছর পর্যন্ত সময় পাবেন। আগের সব সুদ বাবদ পাওনা মওকুফ করা হবে।

এককালীন পরিশোধের জন্য সুদহার আরও কম; ব্যাংকের কস্ট অব ফান্ডের সমান। তবে এক বছরের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে সুবিধা বাতিল হবে। এই এককালীন এক্সিট সুবিধা ও পুনঃতফসিল সুবিধা কার্যকরের ৯০ দিনের ব্যাংক ও গ্রাহকের মামলা স্থগিত করতে হবে। পরবর্তীতে গ্রাহক কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে সুবিধা বাতিল করে মামলা পুনরায় চালু হবে।

বাংলাধারা/এফএস/এমআর/টিএম/বি

আরও পড়ুন

spot_img

সর্বশেষ