সন্দ্বীপ প্রতিনিধি »
অতিরিক্ত যাত্রী বোঝায় বোটে উঠতে অসম্মতি জানানোয় সন্দ্বীপ কুমিরা গুপ্তছড়া ঘাটের সন্দ্বীপ অংশে ঘাটকর্মীরা দুই প্রবাসী সহ চার যাত্রীকে পিটিয়ে আহত করে নদীতে ফেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭জুন) বিকাল ৩টার দিতে সার্ভিস বোট থেকে কূলে যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত লালবোটে অতিরিক্ত যাত্রী হিসেবে উঠতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে তাদের উপর এই হামলা হয়েছে বলে জানা গেছে প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে।
হামলার শিকার হওয়া ঐ চার ব্যাক্তি মুছাপুরের আলীমিয়ার বাজার এলাকার মান্দিরগো বাড়ির বাসিন্দা।
জানা যায়, সোহেল ও শিবলু দুজন প্রবাস থেকে সদ্য বাংলাদেশে এসেছেন। তাদের এগিয়ে আনতে যাওয়া পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে আজ চট্টগ্রাম থেকে সন্দ্বীপ যান তাঁরা। এসময় তাদের ছোট ভাই শিহাব,পিতা মানিক, মা, সোহেলের স্ত্রী-সন্তান ও বোন সাথে ছিল।
সার্ভিস বোট সন্দ্বীপের কূলে যাওয়ার পর সার্ভিস বোট থেকে যাত্রীদের কূলে নামানোর জন্য আসা লাল বোটে অতিরিক্ত যাত্রী থাকায় সেই বোটে যেতে অস্বীকৃতি জানায় সোহেল। সে বোটের কর্মীদের জানায় তার সাথে তার ছোট বাচ্চা আছে, মা বোন স্ত্রী আছে,সে পরের বোটে যাবে।
এই কথা বলার সাথে সাথে কর্মীদের একজন সোহেলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে৷ গালির প্রতিবাদ করার পর বোট কর্মীরা প্রথমে সোহেলকে ধাক্কা দিয়ে সার্ভিসবোট থেকে লাল বোটে ফেলে দেয়। পরে সেখানে তাকে বেধড়ক পেটায়। সোহেলকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তার পিতা মানিক ও ছোট দুই ভাই শিবলু ও শিহাবকেও মারধর করে ঘাট ইজারাদারের লোকজন।
এসময় সার্ভিস বোটে থাকা যাত্রীরা বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে ইজারাদারের লোকজন লালবোট চালিয়ে সার্ভিস বোট থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। সেখানে ঐ অবস্থায় আরেক দফা মারধর করা হয় তাদের। পরে কূলের কাছাকাছি এলে একজন কর্মচারী সোহলকে লাথি দিয়ে নদীতে ফেলে দেয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আবজাল হোসেন ও মাহবুবুর রহমান শিমুল বাংলাধারাকে জানান, অতর্কিত দেখি ঘাটের লোকজন মিলে লালবোটে ফেলে একজনকে মারছে। এরপর ঐ লোকটাকে বাঁচাতে আরও তিনজন সার্ভিস বোট থেকে লাফিয়ে লাল বোটে যায়। সাথে সাথে তারা লালবোটটা সার্ভিস বোটের কাছ থেকে সরিয়ে নেয়। এরপর কিছুদূর নিয়ে গিয়ে নৌকা থামিয়ে নদীর মাঝখানে তাদের আবার পেটায় ঘাট ইজারাদারের লোকজন ।পরে কূলে নিয়ে লাথি মেরে বোট থেকে ফেলে দেয়।লোকটাকে যখন পেটানো হয় তখন তার সাথে আসা স্ত্রী,ছোট একটা মেয়ে ও তাঁর মা বোন সার্ভিস বোটে ছিলো।
ঘাট ইজারাদার এস এম আনোয়ার হোসেনকে দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানা যায়নি। তবে তার ছোটভাই সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান তার বড়ভাই এস এম আনোয়ার হোসেন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তবে ঘাটে ঘটে যাওয়া অপৃতিকর ঘটনার বিরুদ্ধে তাঁরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
উল্লেখ্য , ২ এপ্রিল ২০১৭ সালে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝায় লালবোট উল্টে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল এই ঘাটে।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর