বাংলাধারা প্রতিবেদন »
করোনা মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করায় গত বছরের ২০ জুন চট্টগ্রামস্থ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন-এ অধ্যয়নরত ১১০ শিক্ষার্থী নিজ দেশ আফগানিস্তানে ফেরত গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে আরও বেশ কিছু শিক্ষার্থী ধাপে ধাপে ফেরত গিয়েছিল।
সেদিন সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে, কাম এয়ারের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তারা বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।
বাংলাদেশে অবস্থিত আফগানিস্তান দূতাবাস সরাসরি তদারকির মাধ্যমে এদেশে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করেছিল।
এখন দেশটিতে তালেবানের উত্থানের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ওই শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে ফিরতে চায়।
জাতিসংঘের উদ্বাস্তু সংস্থা- ইউএনএইচসিআর উদ্যোগ নিয়ে একটি বিশেষ ফ্লাইটে শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বাংলাদেশে আসার আগে তারা টিকা নিয়েছেন।
জানা যায়, সেই বিশেষ ফ্লাইটে শিক্ষার্থীদের সাথে আফগানিস্তানে আটকেপড়া ১০ বাংলাদেশিরও আসার কথা ছিল। তাদের মধ্যে ছয়জন ব্র্যাকের, বাকিরা আফগান ওয়ারলেস কোম্পানিতে কর্মরত।
আজ (২৫ আগস্ট) বুধবার একটি বিশেষ উড়োজাহাজে (চার্টার্ড ফ্লাইট) করে আফগানিস্তান থেকে তারা ঢাকায় আসার কথা ছিল। এ জন্য তাদের বোর্ডিং পাসও রেডি ছিল।
জানা যায়, বাংলাদেশে আসার জন্য তারা একটি গাড়িতে করে কাবুল বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন। তখন তাদের জানানো হল- তারা যেতে পারছেন না। ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। তবে কী কারণে ফ্লাইট বাতিল হয়েছে তা এখনও জানা যায় নি।
চট্টগ্রাম এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যানের (এইউডব্লিউ) এক কর্মকর্তা জানান, এ বছরের জুলাই থেকে বাংলাদেশে ফেরার চেষ্টা করছিলেন ১৫০ ছাত্রী। তবে জুলাই মাসে তারা বাংলাদেশের ভিসা পাওয়ার লক্ষ্যে কাবুলে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করেন। তবে আফগানিস্থানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দ থেকে দেড়শ আফগান ছাত্রীর জন্য বাংলাদেশের ভিসার ব্যবস্থা করা হয়।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, আফগানিস্তান থেকে যারা আসছেন, তারা শরণার্থী নন। তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী। এটা নিশ্চিত হয়েই বাংলাদেশ তাদের এখানে ফেরার অনুমতি দেয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরও বিষয়টি ওয়াকিবহাল রয়েছে। ওই বিশেষ বিমানে করে প্রথমে ঢাকায়, পরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিয়ম মেনে তাদেরকে চট্টগ্রামে আনার কথা ছিল।
সবকিছু ব্যবস্থা করার পরও শেষ পর্যন্ত কেন তারা আসতে পারেনি সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
প্রসঙ্গ, আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গার মতো ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর কয়েকশ ছাত্রীর এখানে উচ্চ শিক্ষার বেশিরভাগ ব্যয় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো বহন করে থাকে। নগরীর এমএম আলী রোডে অবস্থিত এইউডব্লিউর অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের এক হাজারেরও বেশি ছাত্রী লেখাপড়া করছেন বলে একাডেমিক বিভাগ থেকে জানা গেছে।
বাংলাধারা/এফএস/এআই