বাংলাধারা প্রতিবেদক »
চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষায় একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেছেন, করোনার প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও। সরকার সহযোগিতা করছে, তবে আরও বেশি দরকার।
করোনাকালীন সময়ে বেসরকারি উচ্চ শিক্ষায় চট্টগ্রামের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘তেমন ভালো সেটা বলা যাবে না। এ মুহূর্তে পুরো বিশ্বে অস্থিরতা। প্রভাব পড়েছে প্রতিটি সেক্টরে। শিক্ষাও বাদ নেই। এখন সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা অনলাইনে নিতে হচ্ছে। প্রযুক্তি সুবিধা সবার এক রকম নয়। প্রশাসনিক কাজ চলছে রুটিন করে। সরকার সহযোগিতা করছে। তবে আরও বেশি দরকার। চট্টগ্রামের বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে। অনেকে বেতন-ভাতা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। দু’একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেক লোক বিদায় নিয়েছেন। শিক্ষা নিয়ে সত্যিই উদ্বিগ্ন ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক-শিক্ষকেরা। তবে পরিস্থিতি ভালো হলে আশা করছি সংকট কেটে যাবে।’
চট্টগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চ্যালেঞ্জগুলোর আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ তো অনেক। ছেলে মেয়েদের আবার পাঠ্য-বইমুখী করাতে হবে। ১৭ মাসের বিরতি হয়ে গেছে। অনেক শিক্ষার্থী সেমিস্টার ড্রপ দিয়েছে। কয়েকজন অভিভাবক বলেছেন, তাদের ৩ সন্তানের পড়ালেখা একসঙ্গে চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্রদের আয়ে চলে। ভর্তি কমে যাওয়ায় সামনে আর্থিক সংকট আরও বড় হয়ে দেখা দেবে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর টিকা নিশ্চিত করা জরুরি।’
সংকট উত্তরণে সরকারকে চট্টগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশে দাঁড়াতে হবে উল্লেখ করে ড. অনুপম সেন বলেন, ‘শিক্ষার জন্য বরাদ্দ ২ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশ করা জরুরি। প্রয়োজনে শিক্ষার প্রসারে টাকা দিতে হবে। ছেলে মেয়েদের দ্রুত বৃত্তি দিতে হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট তুলনামূলক কম। সে কারণে অনেকে পড়তে চায়। কিন্তু সব ছেলে-মেয়ের অগাধ টাকা পয়সা নেই। দুই দশকে শিক্ষার মোটামুটি অগ্রগতি হয়েছে। এ মুহূর্তে করোনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দক্ষ লোক বাড়াতে হবে। সেখানে অভিজ্ঞ লোকের সংকট আছে। চট্টগ্রামের ইউনিভার্সিটিগুলোর পাশে দাঁড়াতে হবে সরকারকে।’
করোনা মহামারিতে সংকটে পড়েছে বিভিন্ন শিল্প-কারখানা। এই সংকট উত্তরণে সরকার তাদের প্রণোদনা দিয়েছে, দিচ্ছে। শিক্ষা খাতে এ ধরনের প্রণোদনার প্রয়োজন আছে কিনা, এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই। সরকার গার্মেন্টস শিল্প, ক্ষুদ্র শিল্প, কৃষি খাতে বরাদ্দ বাড়িয়েছে। সেখানে প্রণোদনা দিয়েছে। শিক্ষা খাতেও তাদের এ ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে। বিনা শর্তে এ নিয়ে কথা বলা যেতে পারে। ঊর্ধ্বতন মহল এই খাতকে টেনে না তুললে সামনে তা আরও বড় সংকটের মুখে পড়বে। আমাদের অনেক ছেলে মেয়ে প্রতিবছর বিদেশ চলে যায়। মেধাবীরা বাইরে চলে যায় ভালো শিক্ষার আশায়। সে শিক্ষা আমরা নিশ্চিত করতে পারছি না কেন? দরকার শুধু সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা।’
বাংলাধারা/এফএস/এআই