২৯ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রামে রকেট গতিতে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা; ঢাকায় স্থিতিশীল

বাংলাধারা প্রতিবেদন »

বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে রকেট গতিতে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। চট্টগ্রামে করোনা শনাক্তের হার এক মাসের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে। গত ২৫ মে শনাক্ত হয় ১ হাজার ৭০৮ জন। এক মাসের ব্যবধানে আক্রান্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭৬৩ জনে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানা, জনসমাগম, অফিস-আদালত ও কলকারখানা অবস্থানের কারণে চট্টগ্রামে দিন দিন আক্রান্তের হার বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে হার নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, বিআইটিআইডি, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি শ্বিবিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইমপেরিয়াল হাসপাতাল ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করে এখন পর্যন্ত মহানগরে ৩ হাজার ৮৫৮ জন ও উপজেলায় ১ হাজার ৭২৭ জন করোনা রোগী পাওয়া যায়।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বাংলাধারাকে বলেন, চট্টগ্রামে উপজেলার তুলনায় মহানগরে করোনা আক্রান্তের হার বেশি। শহরে আক্রান্তের হার ৬৯ শতাংশ আর উপজেলায় ৩১ শতাংশ। গ্রামের তুলনায় শহরে ঘনবসতি বেশি। গ্রামের মানুষ দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করার সুযোগ আছে। এসব কারণে শহরে আক্রান্তের হার বেশি বলে মনে হয়। তবে সবাইকে অবশ্যই সরকারি নির্দেশনা মেনে চলা জরুরি।

চট্টগ্রামের পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। করোনার প্রকোপ শুরুর পর চট্টগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলেও গুরুত্ব দিয়ে মানা হয় না স্বাস্থ্যবিধি। লকডাউনের মধ্যে মানুষের আনাগোনা কমে নি। রোগী বেড়ে যাওয়াতে এখন হাসপাতালে জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। গত বুধবার পর্যন্ত চট্টগ্রামে আক্রান্ত হয় ৫ হাজার ৫৮৫ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৮৬ জন। মারা গেছেন ১২৭ জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫০৯ জন এবং আইসোলেশন আছেন ৩৯৬ জন। 

চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন হাটহাজারীতে। গতকাল পর্যন্ত সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৩২৩ জন। পটিয়ায় ২৩৩, সীতাকুন্ডে ২০২, বোয়ালখালীতে ১৭৯ এবং চন্দনাইশে ১২৯, লোহাগাড়ায় ১০১, রাউজানে ১০১, সাতকানিয়ায় ৯৩, বাঁশখালীতে ৮২, রাঙ্গুনিয়ায় ৯৬, আনোয়ারায় ৬৩, ফটিকছড়িতে ৬২ জন, সন্দ্বীপে ২৫ এবং মীরসরাইয়ে ৩৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

এদিকে নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ আসার পর লাপাত্তা হয়ে যাওয়া রোগীরাই করোনা বিস্তারে বড় ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। এ অবস্থায় নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে একাধিক মোবাইল নম্বর সংযুক্ত করার পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি জমা দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

এর আগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১০টি ওয়ার্ড রেড জোনের মধ্যে পড়েছে। করোনা প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটির গত শনিবারের সভায় এসব এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়। 

রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা এলাকাগুলো হল- চট্টগ্রাম বন্দরে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড, পতেঙ্গার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড, পাহাড়তলির ১০ নম্বর ওয়ার্ড, কোতোয়ালির ১৬ নম্বর ওয়ার্ড, ২০ থেকে ২২ নম্বর ওয়ার্ড, খুলশীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ড এবং হালিশহর এলাকার ২৬ নম্বর ওয়ার্ড।

চট্টগ্রামের যেসব এলাকায় প্রতি এক লাখ জনসংখ্যায় ১৪ দিনে ৬০ জন আক্রান্ত হয়েছে সেসব এলাকাকে রেড জোন চিহ্নিত করা হয়েছে। 

ইতোমধ্যে নগরীর ১০ নং ওয়ার্ড উত্তর কাট্টলী এলাকায় লাকডাউন বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পরবর্তী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নগরীর চকবাজার এলাকাকে লকডাউনের আওতায় আনার পরিকল্পনা শুরু হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম

আরও পড়ুন