২৮ অক্টোবর ২০২৫

তরুণদের উৎসাহ যোগাচ্ছে আজিমের পেঁপে বাগান

দেবাশীষ বড়ুয়া রাজু, বোয়ালখালী »

চট্টগ্রাম চলমান বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালে প্রতিদিনই আসছে কোনো না কোনো দুঃসংবাদ। জীবনধারায়ও এসেছে পরিবর্তন। তাই বলে রুদ্ধ হয়ে আসা জীবনযাত্রায় বসে থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় অপচয় করার লোক নন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের আমীর হোসেনের ছেলে মো. আজিম। তিনি সরকারি চাকুরিজীবী।

গত ৩ মাস আগে উপজেলার পোপাদিয়া ইউনিয়নের আকলিয়া মৌজার কানুনগোপাড়া-শ্রীপুর বুড়া মসজিদ সড়কের পাশে থাকা নিজের ১০ শতক জমিতে শখের বশে করেছেন পেঁপে বাগান। এছাড়াও বাগানে বেগুনসহ নানান শাক-সবজির পাশাপাশি রোপণ করেছেন বিভিন্ন জাতের লেবু, কলা, পেয়ারা, আম গাছ। তার সবজি বাগানে উৎপাদিত ফসল পরিবার পরিজনের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি পাড়া প্রতিবেশিদের মাঝেও বিলি করে যাচ্ছেন তিনি।

মো. আজিম জানান, গত মার্চের মাসে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে ওই সময়ে সড়কের পাশে অনাবাদি পড়ে থাকা নিজের ১০ শতক জমিতে শখের বশে বাগান করার পরিকল্পনা মাথায় আসে। যেই ভাবনা সেই কাজ। অথচ উপজেলা যাতায়াতের প্রধান সড়কের পাশে হওয়ায় পরিত্যক্ত ওই জায়গায় গাড়ীর গ্যারেজ গড়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন অনেকেই। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে বাগান গড়ে তুলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ১০ শতক জমিতে উন্নত জাতের উচ্চ ফলনশীল ১শত পেঁপে চারা রোপণ করেছি। বর্তমানে প্রতিটি পেঁপে গাছে মণের ওপরে ফলন এসেছে। অন্যান্য শাক-সবজি পরিবার, পরিজন ও পাড়া প্রতিবেশীর মাঝেও বিতরণ করেছি। এতে এক ধরণের তৃপ্তি রয়েছে। সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে ভবিষ্যতে আরও ব্যাপক আকারে পেঁপে বাগান গড়ার কথা জানান তিনি।

সাপ্তাহিক সরকারি বন্ধের দিন নিয়মিত বাগানে সময় দিয়ে বাগানের পরিচর্যা করেন তিনি এখন। ইতিমধ্যে কাঁচা পেঁপে কিনতে আগ্রহ দেখিয়ে যোগাযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা। পেঁপে বিক্রি করে লাভবান হবেন বলে আশাবাদী মো. আজিম।

একই এলাকার বাসিন্দা শাহাদাত বলেন, আজিম শিক্ষিত যুবক, সরকারি চাকুরিও করেন। বাগান করার কথা দূরে থাক, এখনকার দিনের গ্রামের ছেলেমেয়েরা বড় হলেও চাকরি পেলে শহরে বাসা নিয়ে চলে যায়। তবে আজিম ব্যতিক্রম। সে বাগানে সবজি উৎপাদন করছে। আমরাও তাকে নানাভাবে সহযোগিতা এবং উৎসাহিত করছি। আজিমের পেঁপে চাষ দেখে আশেপাশের অনেকেই এখন অনাবাদি পরিত্যক্ত জমিতে পেঁপে চাষের আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

আজিমের বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, সারি সারি পেঁপে গাছ। প্রতিটি গাছে ঝুলছে ছোট বড় অসংখ্য কাঁচা পেঁপে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আতিক উল্লাহ জানান, জলাবদ্ধতা হচ্ছে পেঁপে গাছের প্রধান সমস্যা, পানি নিষ্কাসনের যথাযথ ব্যাবস্থা করতে হবে। চারা লাগানোর সময় ২-৩ ফুট গর্ত করে প্রতি গর্তে ৫০ গ্রাম করে গোরন অবশ্যই দিতে হবে তাতে ফলন ভাল হবে। এছাড়াও মকড়সা ও ছত্রাক ছাড়া পেঁপে বাগানে তেমন কোনো সমস্যা দেখা যায় না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ পেঁপে চাষে ভাগ্য বদলে ফেলা যায়।

তিনি আরও বলেন, এই দুঃসময়ে সকলে আজিমের মতো এগিয়ে আসলে দেশ উপকৃত হবে। এ ধরনের শাক-সবজি বাগান পরিবারের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হতে পারে।

বাংলাধারা/এফএ/টিএম/এএ

আরও পড়ুন