২৫ অক্টোবর ২০২৫

অবরোধ-

কক্সবাজারে নাশকতা ঠেকাতে তৎপর আইন শৃঙ্খলা বাহিনী

বিএনপি-জামায়াতের সমমনা দলগুলোর দ্বিতীয় দফায় ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে কক্সবাজারে নাশকতা ঠেকাতে তৎপরতা চালাচ্ছে আইনশৃংখলা বাহিনী। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকলেও মহাসড়ক, উপসড়কে ছোট যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। সকাল থেকে কক্সবাজার শহর থেকে উপজেলা সমুহে সকল প্রকার যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলছে।

পরিবহন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, কক্সবাজার থেকে দূরপাল্লার কোন বাস ছেড়ে যায়নি। তবে সকালে মহাসড়কে কিছু বাস চলাচল করতে দেখেছেন বলে দাবি বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিদের।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী জানিয়েছেন, কক্সবাজারের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। কিছু লোকালবাসসহ বিছিন্ন ভাবে মানুষ চলাচল করছে।

তিনি আরো বলেন, বিশেষ করে রাতে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বাস গুলো যাতে নিরাপদে পৌঁছতে পারে সে জন্য জেলা পুলিশের বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

সোমবার সকাল থেকে কক্সবাজারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্ট ও মহাসড়কে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। প্রতিটি সড়কে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির টহল ও অবস্থান দেখা মিলেছে। টহলে রয়েছে নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিজানুর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশ সকল প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের অবস্থান নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে টহল। র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরাও মাঠে রয়েছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা বা নাশকতার চেষ্টার খবর পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়ন চট্টগ্রাম জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. নাসিম খান বলেন, হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের এসপি মহোদয়ের নির্দেশে কক্সবাজার চট্রগ্রাম মহাসড়কে ছোট বড় যানবাহন গুলো চলাচলের ক্ষেত্রে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে হাইওয়ে পুলিশের পেট্রোল টিম রয়েছে সতর্ক অবস্থানে। নিরাপদে যাতে যানবাহন চলাচল করতে পারে সেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের দায়িত্বশীলদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মো. রাসেল জানান, উখিয়া-টেকনাফের মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছ। মাঠে টহলে রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রটের নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিম। সরকারি-বেসরকারি অফিস গুলো খোলা, স্বাভাবিক রয়েছে যান চলাচল।

টেকনাফ মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, টেকনাফে পুলিশ সতর্ক অবস্থান রয়েছে।নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্ব পুলিশের পৃথক কয়েকটি টিম সবধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কাজ করছে।

পেকুয়া থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ওমর হায়দার বলেন, বিএনপি- জামায়াতের অবরোধে পেকুয়া কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্তক অবস্থায় রয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট সহ পুলিশের পৃথক টিম মাঠে রয়েছে।

রামু থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু তাহের দেওয়ান বলেন, অবরোধের নামে নাশকতা ঠেকাতে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। এই পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা মাঠে রয়েছে।

মহাসড়কের চকরিয়া অংশে দায়িত্বরত চিরিঙ্গা হাইওয়ে থানার ইনচার্জ খোকন কান্তি রুদ্র জানান, কক্সবাজার মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে হাইওয়ে পুলিশের পৃথক টিম মাঠে দায়িত্বপালন করছে। বিশেষ করে হরতাল বা অবরোধের সময় ছদ্মবেশ এ মোটরসাইকেল যোগে চলাচল কালে কিছু দূস্কৃতকারী হঠাৎ যানবাহনে ‘পেট্রোল বোমা’ নিক্ষেপ করে দ্রুত ছিটকে পড়ে। এসব কারণে সন্দেহজনক মোটরসাইকেল আরোহীকে তল্লাশী করা হচ্ছে।

এদিকে, সোমবার সকাল থেকে কক্সবাজার শহরের লালদিঘীর পাড়স্থ জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে জড়ো হন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তারা শান্তি সমাবেশ ও অবরোধ বিরোধি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। সময়ে সময়ে যুবলীগ কর্মীরা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রাও করে। শহীদ সরণীস্থ কক্সবাজার জেলা বিএনপির কার্যালয় সকাল থেকে তালাবদ্ধ থাকলেও অবস্থান করতে দেখা গেছে পুলিশের একটি দল।

আরও পড়ুন