দলের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে মাঠে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রথম দিনেই মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটায় জাফর প্রচারণামূলক সভা করেছেন পেকুয়ায়।
নিজের সমর্থনে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে জাফর আলম দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, আমি একবার মনোনয়ন পেয়েছি। কিন্তু আমি শতবার মৃত্যুর মুখে আপনার জন্য গিয়েছি। আমি আমার জীবনের সবকিছু উজাড় করে দিয়েছি। আমি কক্সবাজারে এক জনসভায় এককোটি ২৫ লাখ টাকা খরচ করেছি। আপনাদের (দলের নেতাদের) থ্রি-স্টার হোটেলে রেখেছি। ৪০ হাজার মানুষকে একদিনের খাবার দিয়ে এক হাজার ট্রাক গাড়ি করে নিয়ে জনসভাকে সফল করেছি। আপনি সেখানে ঘোষণা করলেন আশেক উল্লাহ এমপি’র নাম।
শোনেন-নেত্রী, আল্লাহ উপরে (আল্লাহ উপরে রয়েছেন)। আমি দোষ করলে আল্লাহ আমার বিচার করবেন। কিন্তু আমি মনে করেছি এটা আমার প্রতি অবিচার হয়েছে। আমার মতো একজন সহজ সরল কর্মীকে, আমাকে বারবার ঠকিয়ে আরেকজনের কাঁধে নৌকা দিয়ে আমার কাছ থেকে নৌকা কেঁড়ে নিয়েছিলেন। সেদিনও আমি হাসিমুখে মেনে নিয়েছি। জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাকে ভোট দিতে না পেরে নেতাকর্মীরা চোখের জল ফেলে চলে গেছে। সেদিনও আমি আপনার কথা শোনেছি।
সুতরাং, এখন আপনি বলেছেন, সাংসদরা স্বতন্ত্র ভোট করতে পারবেন। আমি স্বতন্ত্র ভোট করতেছি। এখানে যদি আমি কারো কোন ধরনের অশুভ পায়তারা দেখি আমরা চকরিয়ার মানুষ, শহীদ আব্দুল হামিদের চকরিয়া, আবুল কালামের চকরিয়া-পেকুয়া এটা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চকরিয়া। এখানে কোন অন্যায় আমরা বরদাস্ত করবো..না, করবো না.., করবো.. না।
জাফর বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘আমার চেয়ে নৌকাকে ভালবাসে এমন কে আছে। দিনে নৌকা, রাতে বিএনপি, কার টেলিফোন রিসিভ কর, কার জায়গা দখল কর। সব আমার কাছে খবর আছে। আমাকে পেকুয়ার ভোট দিবেন কি, দিবেন না সেটি আপনাদের ব্যাপার। চাঁদাবাজ, দখলবাজ এগুলা চলবে..না চলবে..না চলবে..না। সোজা কথা।
নিজের অবস্থান তুলে ধরে জাফর বলেন, ‘এখনো বলছি ইনশে আল্লাহ, আল্লাহর যদি রহমত থাকে জাফর জনতা.., জাফর জনতা। আল্লাহর রহমত ছাড়া আমাকে রোখার সাধ্য নাই কারো।
আমার মার্কা ট্রাক, কেন ট্রাক নিয়েছি..? নৌকার অবস্থা বেশি খারাপ। নৌকাকে ট্রাকে তুলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে আবার বলবো, ট্রাক মনে করিয়েন না আপা, এটা নৌকা। টিক আছে। আমি আপনার জাফর।
বক্তব্যে আক্ষেপ করে জাফর আলম আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী একদিন বলতেন ‘আমার জাফর’। কেন জানিনা, কোন্ কালো ইশরায় আমি আপনার পর হয়ে গেলাম।
সভায় পেকুয়া উপজেলা আওয়মীলীগ নেতাকর্মীসহ জাফর সমর্থক জনতা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, জাফরের এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার পাবার পর নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। কেউ বলছেন, ঘরের ছেলে মায়ের কাছে মনের ক্ষোভ ঝাড়লেন। মনের কষ্ট খোলাসা করলেন।
আবার জাফর বিরোধীরা বলছেন, জাফর-প্রধানমন্ত্রীর সাথে ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। উদ্যত্তপূর্ণ আচরণ করেছেন। চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। নেত্রী কি পদক্ষেপ নেন দেখি।













