৫ নভেম্বর ২০২৫

আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ কারি কাউকেই ছাড় নয় : আইজিপি

সায়ীদ আলমগীর, কক্সবাজার »

আধিপত্য বিস্তার, মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ এবং চাঁদাবাজির ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরেএসও) লড়াইয়ে সাধারণ রোহিঙ্গারা আতঙ্কিত। জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ক্যাম্পে নিয়োজিত দেশি-বিদেশি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায়ই গোলাগুলি, সংঘর্ষ ও খুনোখুনির এসব ঘটনা গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

বুধবার (৩ মে) বিকেলে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে বিকেলে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এমন কথা বলেছেন তিনি।

আইজিপি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংগঠিত প্রতিটি ঘটনা আমাদের নজরে রয়েছে। সংগঠিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত চলমান। করণীয় নির্ধারণ করতেও কাজ করছি আমরা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যারাই অপরাধ সংগঠিত করুক, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। যে আইন শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে তাকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

সম্প্রতি ট্রলার হতে ১০ মরদেহ উদ্ধার এবং এ নিয়ে আইজিপি বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ র‌্যাব, সিআইডিসহ বিভিন্ন দপ্তর কাজ করছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অনেককে আটক করা হয়েছে। আটক অনেকে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিও দিয়েছে। আশা করছি এ মৃত্যুর রহস্য দ্রুত বের করা হবে।

টেকনাফে সংগঠিত অপহরণ নিয়ে আইজিপি বলেন, সম্প্রতি টেকনাফে কিছু অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। অপহরণের সাথে কারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করতে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। তাদের চিহ্নিত করা গেলে দ্রুতই আইনের আওতায় আনা হবে। অপহরণের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।

আইজিপি বলেন, আমাদের অনেক সফলতা রয়েছ। সকলের সহযোগিতা না পেলে এ সফলতা আসতো না। ভবিষ্যতে দ্রুত সেবা পেতে আপনারা জাতীয় সেবা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করবেন। আপনারা শুধু তথ্য দিবেন। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিবো।

আত্মসমর্পণ করা জলদস্যুদের বিষয়ে আইজিপি বলেন, কেউ ভাল হতে চাইলে তাকে সুযোগ দিতে হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদারতার মাধ্যমে দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাওয়ায় জলদুস্যদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টির আইনী প্রক্রিয়াটা অনেক লম্বা এবং ধারাবাহিক। ধীরে ধীরে তাদের মামলাগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। তবে আমরা সর্বশেষ পর্যন্ত দেখবো আত্মসমর্পণ করা দস্যুরা সঠিক পথে ফিরছে কিনা।

তিনি বলেন, যেখানে অপরাধ সেখানে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে ভাল কাজগুলোতে সহযোগিতা থাকবে। আপনারা নিজের সন্তানদের প্রতি সজাগ থাকুন। আপনার সন্তান সঠিক সময় বাসায় ফিরছে কিনা, পড়ার টেবিলে বসছে কিনা, নিয়মিত খেলার মাঠে থাকে কিনা তা খতিয়ে দেখুন। এতে সমাজে অনেক অপরাধ কমে আসবে।

এর আগে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন উখিয়ার ৮ এপিবিএনের আওতাধীন ঘোনারপাড়া পুলিশ ক্যাম্প-১৯ পরিদর্শন করেন। তিনি ক্যাম্পে পৌঁছালে এপিবিএনের একটি সু-সজ্জিত দল আইজিপিকে অভিবাদন জানান। অভিবাদন গ্রহণ শেষে আইজিপি এবং অতিরিক্ত আইজিপিগণ ঘোনারপাড়া পুলিশ ক্যাম্প চত্বরে গাছের চারা রোপন করেন। এরপর আইজিপি ৮ এপিবিএন কার্যালয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা ও সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কক্সবাজারে কর্মরত এপিবিএনের অফিসারদের সাথে মতবিনিময় করেন।

এ সময় অতিরিক্ত আইপিজিপি (ক্রাইম এন্ড অপ্স) অতিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজিপি ড. হাসান উল হায়দার, ডিআইজি জামিল হাসান, ৮ এপিবিএন অধিনায়ক আমির জাফর, সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. ফারুক আহমেদসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থান ছিলেন। বিকেলে ব্রিফিংকালেও এসব কর্মকর্তা ছাড়াও পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলামসহ শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ