৭ ডিসেম্বর ২০২৫

সংক্রমণ বেড়েই চলেছে

সম্পাদকীয় »

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। উদ্বেগজনক অবস্থায় রোগ চিহ্নিতের ক্ষেত্রে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যার ফলে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক আরও বেড়ে যাচ্ছে। এই সংক্রমণে পৃথিবী যেন বদলে গেছে। মানুষের জীবন-যাপনের স্বাভাবিকতা যেমন থমকে গেছে, তেমনি অর্থনৈতিকসহ নানা ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বে যেমন ক্রমাগত আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, তেমনি দেশেও হু হু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ, বাড়ছে লাশের সংখ্যা।

বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে। এ ভাইরাসে সারা বিশ্বে আজ মঙ্গলবার (২ জুন) পর্যন্ত আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৬৩ লাখ ৬৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে বর্তমানে ৩০ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫১ জন চিকিৎসাধীন এবং তাদের মধ্যে ৫৩ হাজার ৪০২ জন (২ শতাংশ) আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে।

তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছে অনেক মানুষ। এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে ২৯ লাখ তিন হাজার ৪১৮ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নতুন করে মারা গেছে ৩৭ জন।

এ নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেল ৭০৯ জন। এছাড়া এই ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে আরও ২৯১১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট করোনাক্রান্তের সংখ্যা ৫২,৪৪৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা করা হয়েছে ১২৭০৪টি নমুনা।

আজ সোমবার (১ জুন) দুপুরে করোনা নিয়ে নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।

সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, এখন পর্যন্ত করোনার বিস্তার রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সবচেয়ে জরুরি বিষয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো- অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ অকারণে ঘোরাফেরা করছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না, এমন বিষয় সামনে আসছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগের বলেই প্রতীয়মান হয়।

বলার অপেক্ষা রাখে না, কিছুদিন হলো দেশে জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে লকডাউন শিথিল করার বিষয়টি আলোচনায় আসে। দোকান-পাট খুলছে এবং মানুষ বের হচ্ছে। ফলে এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটা কতটা জরুরি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একদিকে দেশে জনসংখ্যা বেশি, অন্যদিকে প্রস্তুতি কতটা এবং মানুষের সচেতনতার চিত্র আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।

মনে রাখা দরকার, এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছিল- মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোই যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও প্রস্তুতি এ মরণব্যাধি মোকাবিলায় কতটা কার্যকর! ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।

আমরা বলতে চাই, করোনাভাইরাসের সংক্রমণে যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা রোধে সর্বাত্মক সচেতনতা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে মানুষের ভেতর সচেতনতা বাড়াতে যেমন উদ্যোগ নিতে হবে, তেমনি কেউ যেন অকারণে ঘোরাফেরা না করে সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।

এটা মনে রাখা দরকার যে, করোনাকালে সামাজিক দূরত্বসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা মেনে চলা অপরিহার্য। কেননা করোনার সংক্রমণ রোধ করতে হলে এটার ভিন্ন পথ নেই।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, দোকান-পাটে বেচাকেনার সময় পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন হোক। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আমলে নেওয়া দরকার, এর আগে একে অন্যের কাঁধে হাত রেখে গল্প করা, আড্ডার মধ্যেও কেউ কেউ মুখে মাস্ক পরলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন না এমন বিষয় উঠে এসেছে। নিত্যপণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে দূরত্ব মানছেন না অনেকেই, এটিও আলোচনায় এসেছে- যা আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকুক এমনটি কাম্য।

আরও পড়ুন