সায়ীদ আলমগীর, কক্সবাজার»
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এম.পি বলেছেন, জনপ্রতিনিধিরাই সবচেয়ে বেশি দখলবাজিতে জড়িত। সে যেই দলেরই হোক তাদের ছাড় দেয়া হবে না। বন বিভাগে কর্মরত অনেকে প্রত্যক্ষ না হলেও পরোক্ষভাবে দখলদারদের সাথে জড়িত। এসব লোকের কারণে দেশের ক্ষতি হচ্ছে।
সোমবার (১৪ মার্চ) কক্সবাজারের চকরিয়ার খুটাখালী মেদাকচ্ছপিয়া ও ফাঁসিয়াখালী সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের সাথে মতবিনিময় সভায় বেগম হাবিবুন নাহার এমপি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
দুঃখ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ঘটনায় ৮০-৯০ শতাংশই জনপ্রতিনিধিরা জড়িত। দখলদার, বনজ সম্পদ ধ্বংসকারীদের তালিকা করে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
মেদাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান প্রাঙ্গণে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি আরো বলেন, নিজের এলাকার বনজ সম্পদ নিজেকে রক্ষা করতে হবে। সর্ব সেক্টরে অপকর্ম হয়। শতভাগ সৎ মানুষ মিলে না। একে অপরের দোষ দিয়ে লাভ নেই। নিজেকে সৎ হতে হবে। পারস্পরিক রশি টানাটানি অবসান চাই। তাহলেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব। বনজ সম্পদ ধ্বংসকারীদের সহায়তা না, প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেন, বাগানের ভেতরে বালু মহাল ইজারা দিয়ে সরকার কত টাকা পাচ্ছে? এর কারণে বনজ সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের উন্নয়ন নাই। বালু তুলে একজন, মামলার আসামি হয় আরেকজন। এসব বন্ধ করুন। সবুজ প্রকৃতি জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। গাছের প্রতি মায়া-মমতা গড়ে ওঠা দরকার। বনায়নের ভেতর থেকে সমস্থ ইট ভাটা বন্ধ করার আহবান জানান তিনি।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাসের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ান, নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (নেকম) এর সিনিয়র ডিরেক্টর রাশিদুজ্জামান আহমদ প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগীয় কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, ১৯৫১ সালে বন সৃষ্টি হয়েছে। এখনো সবুজ বনায়ন দৃশ্যমান। জবর দখলের প্রবনতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবু বনকে সম্প্রসারণে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। বন রক্ষা করতে গিয়ে হতাহতের ঘটনাও রয়েছে।
স্থানীয়দের মেদাকচ্ছপিয়া সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, ন্যাশনাল পার্ক কি তা আমরা এখনো জানি না। বন সম্পদের সৌন্দর্য রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।
বন্য হাতির আক্রমণে নিহতদের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে অনুষ্টানে ডুলাহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন, পরিবেশ ও বনজ সম্পদ ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
সরকারী দলের নেতা পরিচয়ে বন বিভাগের জমি দখল করে ইট ভাটা স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার দাবি তুলেন ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন।
সবুজ প্রকৃতি ও বনভূমি রক্ষায় জোরালো ভূমিকা কামনা করে বক্তব্য রাখেন, খুটাখালী ইউপির চেয়ারম্যান মাওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহমান ও ফাঁসিয়াখালীর সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী।
এতে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগ আয়োজিত সভায় কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. সারওয়ার আলম, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান, ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ অফিসার মো. মিজানুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।













