বাংলাধারা ডেস্ক »
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আসামি খলিলুর রহমান ২০১৫ সাল থেকে পলাতক ছিলেন। গ্রেফতার এড়াতে তিনি নিয়মিত বাসা পরিবর্তন ও একা বসবাস শুরু করেন। ব্যবহার করতেন না মোবাইল ফোনও। মাঝে মাঝে গোপনে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতেন। মামলার রায় ঘোষণার পর সাভারে আত্মগোপন করেন তিনি।
যদিও সফলতা আসেনি খলিলুর রহমানের কৌশলে। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সাভার থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি খলিলুর রহমানসহ তার ভাই আজিজুর রহমান, একই এলাকার আশক আলী, জানিরগাঁও ইউনিয়নের শাহনেওয়াজ এবং একই এলাকার রমজান আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টার পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
পাঁচ আসামির মধ্যে খলিলুর রহমান ছাড়া সবাইকে কারাগারে পাঠানো হয়। বিচারকাজ চলাকালীন সময় চার আসামি বিভিন্ন সময় মারা যান।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে গ্রেফতারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের চারটিতে মৃত্যুদণ্ড ও একটিতে দশ বছরের সাজা ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরে র্যাব দণ্ডিত পলাতক আসামি খলিলুর রহমানকে গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। গতকাল রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১৪ সাভার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে খলিলুর রহমান র্যাবকে জানান, মামলার তদন্ত কাজ শুরু হলে ২০১৫ সাল থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। ২০১৭ সালে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে গৃহীত হলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। রাজধানীর দক্ষিণখান, তুরাগ ও উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করেন।
খলিল ১৯৭১ সালে ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্য ছিলেন। যুদ্ধের সময় তিনি রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। পরে চণ্ডীগড় ইউনিয়নের আল বদর বাহিনীর কমান্ডার হন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় নেত্রকোণার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা থানা এলাকায় অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণের চেষ্টা, ধর্ষণ, হত্যা ও গণহত্যায় জড়িত ছিলেন খলিল। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে ২২ জনকে হত্যা, একজনকে ধর্ষণ, একজনকে ধর্ষণের চেষ্টা, অপহৃত ৪ জনের মধ্যে দুজনকে ক্যাম্পে নির্যাতন, ১৪-১৫টি বাড়িতে লুটপাট ও ৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের কথা উল্লেখ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।













