আনোয়ারা প্রতিনিধি »
আনোয়ারার রাঙ্গাদিয়ায় অবস্থিত সিইউএফএল সার কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য মিশ্রিতপানি খেয়ে ১০ দিনের মাথায় আরও ১৩ মহিষের মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (২৪ এপ্রিল) গোবাদিয়া খালে রাসায়নিক এসব বর্জ্য মিশ্যিত পানি পান করলে মহিষগুলো মারা যায়। রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে মরা মহিষগুলো নিয়ে মালিক, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও এলাকাবাসী সিইউএফএল-এর গেটে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে।
এসময় সিই্উএফএলের একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে নিরাপত্তাকর্মীরা মহিষের মালিকদের সাথে নিয়ে মরা মহিষগুলো দেখতে যান। সিইউএফলের পেছনে বসুন্ধরা মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মরা মহিষগুলো। একে একে চোখে পড়তে থাকে মরা মহিষগুলো ।বিষ ক্রিয়ায় মহিষগুলোর মুখে ফানা বের হয়েছে। সাবভাবিকভাবেই বুঝা যায় ব্যপক যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে গবাূি পশুগুলো মারা গেছে। মরা যাওয়া মহিষগুলো সব গর্ভবতী ছিল বলে জানিয়েছেন মালিকরা। এসময় মহিষের মালিক মো. ইব্রাহিম, মো. ইলিয়াছ, নুর মোহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
১০ দিন আগেও একইভাবে সিইউএফএলের বিষাক্ত রাসায়নিক মিশ্রিত বর্জ্য পানি খেয়ে ৪ গবাধি পশুর মৃত্যু হয়। বর্জ্য শোধনাগার না থাকায় বার বার এমন ঘটনা ঘটলেও সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ স্থায়ী কোনো সমাধানের ব্যবস্থা করেন না- এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের। এমনকি রাসায়নিক মিশ্রিত পানি ছাড়ার সময় মাইকিংও করেন না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
তবে এ ঘটনার বিষয়ে জানতে সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামানের মুঠোফোনে বার বার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জানা যায়, সিইউএফএল, ডিএপি সার কারখানাগুলোর রাসায়নিক বর্জ্য মিশ্রিত পানি নালা দিয়ে গিয়ে গোবাদিয়া খাল হয়ে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ে। যার কারণে কর্ণফুলী নদীতে জীব বৈচিত্র হুমকির মুখে রয়েছে। পারকী এলাকায় আগের তুলনায় মিঠা পানির মাছ অনেকটা কমে গেছে। এধরনের বর্জ্য পানি আশপাশের পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি করছে। তবে এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্ত নির্বিকার রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সাধারণ জনগণ।
মহিষের মালিক মো. ইব্রাহিম বলেন, সিইউএফএল কিছু দিন পর পর এসব বিষাক্ত পানি খালে ছেড়ে দেয়। আর এসব পানি পান করে আমাদের কারো না কারো গরু মহিষের মৃত্যু হয়। এছাড়া এই বিষাক্ত পানির কারণে এলাকায় পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতিসাধন হচ্ছে।
বারশত ইউপি সদস্য তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সিইউএফএল কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও তারা এসব বিষয় কর্ণপাত করে না। এখন বিষয়টি আমরা ভূমিমন্ত্রী মহোদয়কে জানাব। মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশ পেলে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করব।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের পরিচালক মুফিদুল ইসলাম বলেন, আমরা এর আগেও একবার তাদেরকে সতর্ক ও জরিমানা করেছি। এভাবে গরু মহিষ মারা যাওয়া খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি আমরা এবার খুব গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।