বান্দরবান, কক্সবাজার প্রতিনিধি »
বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন ঘুমধুম এলাকার জনবসতিতে মিয়ানমার দিক থেকে দুটি মর্টার শেল এসে আঁচড়ে পড়েছে।
রোববার (২৮ আগস্ট) বিকেলে দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপিত তিনটি মর্টার শেল নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু উত্তর মসজিদের কাছে আঁচড়ে পড়ে।
এতে বিস্ফোরণ বা হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয় গ্রামবাসীদের মাঝে।
নিক্ষেপকৃত মর্টারশেল ৩টি বিস্ফোরিত না হলেও ঘটনার পর থেকে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বলে জানায় সূত্র।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আমিন বলেন, বিকেলে বিকট শব্দে একটি গোলা উত্তর পাড়ার আয়াজের বাড়ির কাছে এসে পড়ে। পরে আরো একটি গোলা কাছাকাছি রাস্তায় নিক্ষেপিত হয়। আরেকটি গোলা এসে পড়ে মসজিদের কাছে। এর পর থেকে আমরা খুবই আতঙ্কে আছি, জানিনা কখন কি হয়।
ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ মুঠোফোনে বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে ওপারে গোলাগুলি হচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রে জেনেছি রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এতদিন পাহাড়ে গোলা ছুড়লেও আজকে উত্তর পাড়ায় মর্টার শেলগুলো পড়েছে, স্থানীয়রা আতঙ্কে আছে।
ঘটনাস্থলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, বিজিবির হেড কোয়ার্টারের পরিচালক অপারেশন মেজর ফয়েজুর রহমান জানান, সীমান্তে কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সীমান্তে কর্মরত বিজিবির জোয়ানরা।
অন্যদিকে, রাখাইনে উত্তেজনার কারণে ঘুমধুমের দক্ষিণ কোনাপাড়া সীমান্তের শূন্যরেখায় বাস করা ৬২১টি পরিবারের ৪ হাজার ২০০ রোহিঙ্গারাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
শূন্য রেখার আশ্রয় শিবিরে বাস করা রোহিঙ্গা আবদুল হাকিম (৫৫) বলেন, হঠাৎ করেই রাখাইনে তুমুল সংঘর্ষ হচ্ছে, আমরা আতঙ্কে আছি কখন জানি আমাদের হতাহত হতে হয়। মিয়ানমারের বিজিপি চৌকি বসিয়ে আমাদের নজরদারি করছে, নিজ দেশে আদৌ ফেরত যেতে পারবো কিনা জানি না।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম ইরাবতীতে সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ- মায়ানমার সীমান্তে মায়ানমারের উত্তর মংডুর ৩৮নং সীমান্ত পোস্ট সংলগ্ন এলাকায় মায়ানমারের সেনাবাহিনী ও রাখাইনের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে।
এছাড়াও রাখাইনের পালেতুয়া এলাকায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩৭ জন মিয়ানমারের সেনা সদস্য নিহত হয় বলে উল্লেখ করা হয় এই প্রতিবেদনে।
উল্লেখ্য, নাইক্যছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তে রোহিঙ্গা এবং স্থানীয়া দিনরাত আতঙ্কে রয়েছে। সীমান্তে বিজিবি টহল জোরদার ও সর্তক অবস্থানে রয়েছেন।













