বাংলাধারা ডেস্ক »
কবি ও চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সেলিনা আক্তার শেলীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া একটি পোস্ট নিয়ে সম্প্রতি একটি মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন। বাঙালি মুসলমান চিরকাল পবিত্র রমজান মাসকে ‘মাহে রমজান’ বা ‘রমজানুল মোবারক’ বলতে অভ্যস্ত। ইদানিং ‘রামাদান’ শব্দটির ব্যবহার তাঁর কাছে আরোপিত মনে হওয়ায় তিনি এ বিষয়ে ফেসবুকে একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশ করেন।
কিন্তু সেলিনা শেলীর সহজ, সরল বিশ্বাসে দেয়া এই বক্তব্যকে অহেতুক বিকৃত ও অতিরঞ্জিত করে সুযোগসন্ধানী মৌলবাদী গোষ্ঠী অহেতুক পরিস্থিতিকে জটিল করার চেষ্টা করতে থাকে। কুশপুত্তলিকা দাহসহ মিছিল-সমাবেশ করে মৌলবাদী গোষ্ঠী তাকে নানাভাবে হুমকিধমকি দিতে থাকে। নিরাপত্তাহীনতায় কবি সেলিনা শেলী ফেসবুকে দেয়া তার পোস্টটি পরবর্তীতে প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু এরপরও এই গোষ্ঠী তাকে হুমকিধমকিসহ নানাভাবে হেনস্থা অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে সমগ্র বিষয়টি যাচাইবাছাই ছাড়াই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সেলিনা আক্তার শেলীকে তার কর্মক্ষেত্র থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে এবং বিভাগীয় মামলা দায়ের করে।
আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, কবি সেলিনা শেলী ফেসবুকে দেয়া পোস্টের মাধ্যমে কোনোভাবেই ইসলাম ধর্মের অবমাননা করেননি, পবিত্র রমজান মাসের বিরুদ্ধেও তার কোনো বক্তব্য সেই পোস্টে ছিল না কিংবা ধর্মীয় মনীষীদের নিয়েও কোনো কটূক্তি তিনি করেননি। এরপরও তিনি যেভাবে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন, এটি একজন নাগরিকের ব্যক্তিস্বাধীনতা ক্ষুন্ন করার পাশাপাশি চরম অন্যায় আচরণ বলে আমরা মনে করি।
আমরা কবি সেলিনা শেলীকে হুমকি দেয়া স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী চক্রের এই হীন তৎপরতার তীব্র নিন্দা জানাই। সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অবিলম্বে এই দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে অবিলম্বে সেলিনা আক্তার শেলীর বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপ প্রত্যাহার করার আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিদাতা –
বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী কমিটির সভাপতি প্রফেসর ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মহাসচিব অধ্যক্ষ মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, স্বপ্নযাত্রীর সভাপতি কবি আলী প্রয়াস, মানবাধিকার সংগঠক নূরজাহান খান, লেখক-শিক্ষাবিদ অধ্যাপিকা আনোয়ারা আলম, কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ফেরদৌস আরা আলীম, উন্নয়ন সংগঠক শিশির দত্ত, সাংস্কৃতিক সংগঠক ডা. চন্দন দাশ, আইনজীবী এডভোকেট আকতার কবীর চৌধুরী, কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল, কবি ও সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, কবি ও সাংবাদিক ওমর কায়সার, নাট্যজন কুন্তল বড়ুয়া, শিক্ষক হোসাইন কবির, সাংবাদিক ফারুক ইকবাল, কবি ও সাংবাদিক এজাজ ইউসুফী, সাংবাদিক রাজীব নূর, মহিলা পরিষদ চট্টগ্রাম সাধারণ সম্পাদক লতিফা কবীর, পরিবেশ সংগঠক শরীফ চৌহান, আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসান, সাংস্কৃতিক সংগঠক স্বপন মজুমদার, লেখক আহমেদ মুনির, ইতিহাসের খসড়া সম্পাদক মুহাম্মদ শামসুল হক, লেখক সুমন টিংকু, কবি আসমা বীথি, কবি রিমঝিম আহমেদ ও কবি ফারহানা আনন্দময়ী।
এছাড়া সম্মিলিত আবৃত্তি পরিষদ, উদীচী, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, কণ্ঠনীড়, নির্মাণ আবৃত্তি সংগঠন, বিভাষ, চট্টগ্রাম আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র সাংগঠনিকভাবে এই বিবৃতির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে।













