২৩ অক্টোবর ২০২৫

মিরসরাইয়ে স্ত্রীর সহযোগিতায় স্বামী খুন, গ্রেফতার ৫

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে চাঞ্চল্যকর বৃদ্ধ ফয়েজ আহম্মদ হত্যার ২৪ দিন পর ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকায় স্ত্রীসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি করেরহাট ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বদ্ধ ঘেড়ামারা এলাকার বাসিন্দা। গ্রেফতারকৃতদের শনিবার (১৯ জুলাই) সকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, নিহত ফয়েজের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৫৫), ফিরোজা বেগমের বড় বোন শ্যামলা বেগম (৬০), দিনমজুর আকতার (৩২), দিনমজুর আকতারের দুই সহযোগী ইয়াছিন রুবেল (২৫) ও শাকিব (২৩)।

পুলিশ জানায়, গত ২৬ জুন রাত সাড়ে ১২টায় গ্রেফতারকৃতরা বৃদ্ধ ফয়েজ আহম্মদকে নিজ ঘরে হাত-পা বেঁধে, মুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। ওইদিন সকাল ৯টা নাগাদ পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এই ঘটনায় নিহতের ছেলে আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-১৬) দায়ের করেন।

পুলিশ আরও জানায়, নিহতের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৫৫) এবং তার বড় বোন শ্যামলা বেগম (৬০) স্বামীর ঘরে রাখা টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ডের ছক আঁটে। তারা স্থানীয় দিনমজুর আকতারকে (৩২) ভাড়া করে এবং আকতার তার দুই সহযোগী ইয়াছিন রুবেল (২৫) ও শাকিব (২৩) কে সঙ্গে নেয়।

হত্যাকাণ্ডের রাতে ফিরোজা ধাত্রীর কাজের অজুহাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় দরজা খোলা রেখে যায়। দরজা খোলা রাখার বিষয়টি আকতারকে ফোন করে ফিরোজা জানায়। এরপর ঘটনার দিন রাত ১২টায় দিনমজুর আকতার ও তার দুই সহযোগী ইয়াছিন রুবেল ও শাকিব ঘরে প্রবেশ করে ফয়েজ আহম্মদকে খাটে ঘুমন্ত অবস্থায় হাত-পা বেঁধে ফেলে। এ সময় তিনি চিৎকার করলে তার মুখে কাপড় গুঁজে দেয় এবং মারধর ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে ঘরের ড্রয়ারে থাকা নগদ ৩০ হাজার টাকা লুট করে তারা পালিয়ে যায়। লুট হওয়া টাকার ১৪ হাজার টাকা আকতার নেয়, বাকি ১৬ হাজার টাকা রুবেল ও শাকিব ভাগ করে নেয়।

জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আব্দুল হালিম বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত পারিবারিক হত্যাকাণ্ড। ঘটনাটি উদঘাটনে আমরা প্রযুক্তির সহায়তা, গোপন তথ্য এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বিশ্লেষণ করেছি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে চিহ্নিত আসামিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। তারা হত্যার দায় স্বীকার করেছে এবং আদালতে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে।

মিরসরাই সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নোমান আহমেদ বলেন, ফয়েজ আহম্মদ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত দিনমজুর আকতারকে সীতাকুণ্ড এলাকা থেকে শনিবার ভোরে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রুবেল ও শাকিবকেও গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ফিরোজা বেগম ও শ্যামলা বেগমকেও গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে পাঁচ আসামিই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তারা লুণ্ঠিত টাকার মধ্যে আকতার ১৪ হাজার টাকা নেয় এবং বাকি ১৬ হাজার টাকা রুবেল ও শাকিব ভাগ করে নেয়।

আরও পড়ুন